জেলা প্রতিনিধি, বাগেরহাট
বাগেরহাটের চিতলমারীতে সমাজসেবা হতে ভাতার টাকা মোবাইল ‘বিকাশ’এ পাচ্ছে না প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও বিধবারা। তাদের পাওনা টাকার কোন হদিস নেই। বাউন্স ব্যাক হওয়া পাওনা টাকার জন্যে দরিদ্র ভুক্তভোগীরা প্রতিদিন সমাজসেবা কার্যালয়ে ধর্না দিচ্ছে। চরম ভোগান্তির শিকার দরিদ্র উপকারভোগীরা এই সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বিগত তিন মাসের ভাতার টাকা পায়নি চিতলমারীর চরবানিয়ারী ইউনিয়নের শ্যামপাড়া গ্রামের শারিরীক প্রতিবন্ধী দেবদাস মজুমদারের স্ত্রী শারিরীক প্রতিবন্ধী ফুলি মজুমদার। তিনি জানান, উপজেলা সমাজসেবা অফিসে গিয়েও সমাধান হচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ভুক্তভোগী জানান, বিগত নয় মাসের তিন কিস্তির মোট সাত ৬৫০ টাকা প্রতিবন্ধী ভাতা তিনি পাননি। তাকে সমাজসেবা অফিস থেকে বলা হয়, পুরনো পাওনা টাকা পরবর্তী কিস্তির সাথে একসাথে পাওয়া যাবে। কিন্তু তা তিনি পাননি। ব্রহ্মগাতী গ্রামের বিধবা শ্যামলী বিশ্বাস জানান, তার বয়স্ক ভাতার কোন টাকা এ পর্যন্ত তিনি মোবাইল ‘বিকাশ’এ পাননি।
জানা যায়, মোবাইল ‘বিকাশ’ হতে মে মাসে (২০২৪) চিতলমারীতে প্রতিবন্ধী ভাতা চারজন- জনপ্রতি দুই হাজার ৫৫০টাকা করে মোট ১০ হাজার ২০০ টাকা পায়নি। বয়স্ক ভাতার টাকা পায়নি ২৮ জন। তাদের জনপ্রতি এক হাজার ৮০০ টাকা করে মোট ৫০ হাজার ৪০০ টাকা পায়নি। বিধাব ভাতা পায়নি নয় জন। তাদের জনপ্রতি এক হাজার ৬৫০ টাকা করে মোট ১৪ হাজার ৮৫০ টাকা পায়নি। এর আগের নয় মাসের তিন কিস্তিতে আরো ৪৫ জন উপকারভোগী তাদের ভাতার টাকা বিকাশে পায়নি। বাউন্স ব্যাক হওয়া টাকা পাওয়ার জন্য প্রতিদিন উপকারভোগীরা উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে আসছেন।
চিতলমারী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সোহেল পারভেজ জানান, ভাতা প্রাপ্য উপকারভোগীদের নামের তালিকা উপজেলা হতে ঢাকা কেন্দ্রিয় সমাজসেবা কার্যালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তালিকা পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংকে। এরপর টাকা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক মোবাইল ব্যাংক ‘বিকাশ’ কর্তৃপক্ষের কাছে তালিকাসহ টাকা প্রদানের ব্যবস্থা করে। কিন্তু যেসব উপকারভোগীর মোবাইলে কোন টাকা আসেনি- তার তথ্য বার বার ‘বিকাশ’ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। টাকা পৌঁছাতে ব্যাহত (বাউন্স) হওয়ার পর সেই টাকা কোথায় যাচ্ছে, কি হচ্ছে তাও জানিনা। বাউন্স ব্যাক হওয়া টাকা পরবর্তী কিস্তির টাকার সাথে যুক্ত করে প্রদান করা যেত। তা করা হচ্ছে না। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে উপকারভোগীরা। তারা সমাজসেবা সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষন করছেন। তাই বাউন্স ব্যাক হওয়া টাকা যাতে উপকারভোগীরা পায় এবং তারা যাতে হয়রানি না হয় সেই পদক্ষেপ নিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
এই ব্যাপারে মোবাইল ব্যাংক ‘বিকাশ’র বানিজ্যিক বিভাগের গভর্মেন্ট পার্টনারশীপ ম্যানেজার মো. আনিসুজ্জামান জানান, ভাতার টাকা কে পাবে আর কে পেলনা সেই বিষয়টা দেখার দায়িত্ব সমাজসেবার। কোন উপকারভোগীর মোবাইল নম্বরে টাকা না গেলে বাউন্স ব্যাক হওয়া সেই টাকা কোথায় যায়- তা সমাজসেবা অফিস বলতে পারবে।