জেলা
প্রতিনিধি, রংপুর
রংপুর
সিটি কর্পোরেশনের বর্ধিত এলাকাগুলোতে গড়ে উঠেনি বজ্য
ব্যবস্থাপনা। বর্ধিত ও নতুন এলাকাগুলোতে
প্রতিদিন গড়ে দেড় শ
টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এসব বর্জ্য
পচে দুর্গন্ধ বাতাসে মিশে মারাত্মক বাযূদুষণ
করছে। এতে বাড়ছে স্বাস্থ্য
ঝুঁকি। মশা, মাছি ও
পোকামাকড়ের মাত্রাতিরিক্ত উপদ্রবও বেড়েছে। এনিয়ে চরম ক্ষুদ্ধ বর্ধিত
এলাকাগুলোর বাসিন্দারা।
তারা
বলছেন, ২০১২ সালে রংপুর
পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত
করা হয়। বিলুপ্ত পৌরসভার
১৫টি ওয়ার্ডের সাথে রংপুর সদর
উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন যুক্ত
করা হয়। অথচ নামেই
সিটি কর্পোরেশন। বাস্তবে বর্ধিত এলাকাগুলোতে কিছুই নেই। বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও
গড়ে উঠেনি। যত্রযত্রভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলার
কারণে পরিবেশ দুষণ হচ্ছে। মানুষজনের
মাঝে স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বাড়ছে। অথচ নিবর রয়েছে
সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। তারা কোন উদ্যাগ
নিচ্ছে না।
জানাগেছে,
২০১২ সালে সিটি করপোরেশন
গঠন হওয়ার পরে বর্ধিত এলাকা
বাদেও মহানগরীতে নতুন নতুন এলাকায়
ঘরবাড়ি গড়ে উঠেছে। কোথাও
কোথাও বহুতল ভবনও হয়েছে। ওইসব
এলাকাতেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নেই। নেই ড্রেনেজ
ব্যবস্থা। ফলে নতুন এলাকার
বাসিন্দারা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এনিয়ে সাধারণ মানুষজনের মাঝে চাপা ক্ষোভও
বিরাজ করছে।
এদিকে
রংপুর সিটি কর্পোরেশন সূত্রে
জানাগেছে, প্রতিদিন
গড়ে আড়াই শ মেট্রিক
টন বর্জ্য জমে। ৩৩টি ওয়ার্ডের
মধ্যে পুরনো ১৫টি ওয়ার্ডে বর্জ্য
অপসারণের ব্যবস্থা রয়েছে। এই ১৫টি ওয়ার্ডের
বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ১২০ টন বর্জ্য
উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে
১০০ টন বর্জ্য অপসারণ
করা সম্ভব হয়। বাকি ২০
থেকে ২৫ মেটিক টন
বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয়
না।
এছাড়া
বর্ধিত ও নতুন এলাকাগুলোতে
আরও দেড় শ টন
বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এসব বর্জ্য
পচে দুর্গন্ধ বাতাসে মিশে মারাত্মক বাযূদুষণ
করছে।এসব বর্জ্য হোটেল ও রেস্টুরেন্টের আবর্জনা,
শিল্পকারখানা থেকে
উৎপাদিত আবর্জনা, রান্নাঘরের পরিত্যক্ত আবর্জনা, হাটবাজারের পচনশীল শাকসবজি, কসাইখানার রক্ত অন্যতম উৎস।
যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা উন্মুক্তভাবে
ফেলে রাখায় বাতাস ও মাটি দূষিত
হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে বর্জ্য ফেলার কারণে আশপাশে দুর্গন্ধের পাশাপাশি দেখা যায় মশা,
মাছি ও পোকামাকড়ের মাত্রাতিরিক্ত
উপদ্রব। বর্ষা মৌসুমে বর্জ্যগুলোর অবস্থা হয় আরও ভয়াবহ।
এ
ছাড়া নগরীতে প্রতিদিন আড়াই টনের ওপর
ক্লিনিক্যাল বর্জ্য উৎপন্ন হয়। নদীতে বর্ষা
মৌসুমে সময়মতো বর্জ্য অপসারণ না করায় বর্জ্যগুলোর
দ্রুত পচন প্রক্রিয়া শুরু
হয়। রংপুর সিটি করপোরেশনের ৬টি
নদ-নদীতে পচা বর্জ্য থেকে
তরল, দুর্গন্ধযুক্ত রস তৈরি হয়ে
পানিবাহিত রোগ বাড়াচ্ছে।
তবে
সিটি করপোরেশন বলছে, বর্ধিত ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে
নতুন করে পাঁচটি ওয়ার্ড
বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আনা হয়েছে। তবে
সক্ষমতার অভাবে বাকি ১৩টি ওয়ার্ডের
বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছে
না।
নগরীর
বর্ধিত এলাকা তামপাটের বাসিন্দা আশরাফুল আলম নেতাসহ কয়েকজন
জানান, আমাদের যেখানে-সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলতে
হচ্ছে। বজ্য ব্যবস্থাপনা নেই।
ফলে দুর্গন্ধের পাশাপাশি মশার উপদ্রব বেড়ে
যাচ্ছে। এটা আমাদের পরিবেশের
জন্য মারাত্মক হুমকির। এ পরিস্থিতি ঠিক
করতে প্রতিটি জায়গা একটি ডাস্টবিন দেয়া
খুব প্রয়োজন বলে তারা মনে
করেন।
এবিষয়ে
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল
মেয়র মাহবুবার রহমান মঞ্জু বলেন, বর্ধিক কয়েকটি ওয়ার্ডে বজ্য ব্যবস্থাপনা চালু
হয়েছে। বাকিগুলোতে পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে
তিনি জানান।