দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়ার লঘুচাপটি ধীরে ধীরে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের দিকে সরে আসছে। শক্তি বাড়িয়ে এটি শুক্রবার (২৪ মে) নিম্নচাপ, তার দু’একদিনের মধ্যেই ‘ঘূর্ণিঝড় রিমালে’ রূপ নিতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার আগে এটি গতিমুখ বোঝা যাবে না। বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়াবিদরা এই তথ্য জানিয়েছেন।
তাদের মতে, লঘুচাপের কারণে সাগর বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। কেননা, এর কেন্দ্রে বর্তমানে বাতাসের গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটার, যা ওঠে যাচ্ছে ৫৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) এটি গতিবেগ উঠে যেতে পারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত, সে সময় সাগর ব্যাপক বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে। তারপর দিন এটির গতিবেগ উঠে যেতে পারে ৭০ কিলোমিটারে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে প্রথমে নিম্নচাপ, পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।
এদিকে, ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী এম শর্মা জানিয়েছেন, লঘুচাপটি শুক্রবার শেষ রাতের দিকে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। শনিবার এটি উত্তর পূর্ব বঙ্গোপসাগরে এসে পৌঁছাবে। ওই সময়ে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় রিমালে পরিণত হতে পারে। এ নামটি ওমানের দেওয়া।
ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের উপর যে ঘূর্ণাবর্ত ছিল, তা শক্তি বৃদ্ধি করে পরিণত হয়েছে নিম্নচাপ অঞ্চলে। সাগরের উপর দিয়ে সেই নিম্নচাপ অঞ্চল ক্রমেই এগোচ্ছে উত্তর-পূর্ব দিকে। শুক্রবার তা পরিণত হতে পারে গভীর নিম্নচাপে। তার সঙ্গেই দোসর হিসাবে রয়েছে আর একটি ঘূর্ণাবর্ত। বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের উপর বিস্তৃত রয়েছে সেটি। এই জোড়া ফলার প্রভাবেই বুধ থেকে রোববার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা। যদি গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়, তা হলে তার নাম হবে ‘রেমাল’। শনি এবং রোববার দক্ষিণের তিন জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। বাকি জেলায়ও ঝড়বৃষ্টি।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সব ঠিকঠাক চললে শুক্রবার সকালে এই নিম্নচাপ অঞ্চল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তার পর তা বঙ্গোপসাগরের উপর দিয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে এগোবে। ২৫ তারিখ, শনিবার সন্ধ্যায় উত্তর-পূর্ব এবং সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে পৌঁছে যাবে গভীর নিম্নচাপ।
বুধবার (২২ মে) বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, দেশের ৮ বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ীভাবে/দমকা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সময়ে দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থেকে রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, লঘুচাপটি এখনো বাংলাদেশের উপকূল থেকে অনেক দুরে এবং তামিলনাড়ু ও অন্ধ্র উপকূলের কাছাকাছি থাকায় দেশের মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকাগুলোর জন্য কোনো সতর্কতা নেই।